পুরোনো পথেই বিসিবি পরিচালক হচ্ছেন বিএনপি নেতা জুলু

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচনে পরিচালকের দুটি পদে (খুলনা বিভাগ) মাত্র দুটি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। বাছাইতে মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়ায় খুলনা জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রতিনিধি জুলফিকার আলী খান জুলুর পরিচালক হওয়া সময়ের অপেক্ষামাত্র। ক্রীড়াঙ্গনে সম্মানজনক এ পদের বিষয়ে উচ্ছ্বসিত তিনি। তবে বিসিবির পরিচালক হওয়ার দৌড়ে জুলুর নাম দেখে বিস্মিত ক্রীড়া সংগঠকরা।
আশির দশকের ভালো ক্রিকেটার হলেও গত ২৫ বছরে খুলনার ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে জুলুর তেমন সম্পৃক্ততা ছিল না। খুলনা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও রূপসা উপজেলার আইচগাতী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হিসেবেই বেশি পরিচিত তিনি।
২০১২ সালে বিসিবি নির্বাচনে একইভাবে খুলনা থেকে কাউন্সিলর হয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ সোহেল। পরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পরিচালক নির্বাচন হন তিনি। নির্বাচনের আগে কখনোই তাকে খুলনার ক্রীড়াঙ্গনে দেখা যায়নি। আওয়ামী লীগের পরের ১২ বছর একই প্রক্রিয়ায় পরিচালক হন সোহেল। বিষয়টি নিয়ে তখন হতাশা প্রকাশ করেছিলেন ক্রীড়া সংগঠকরা।
প্রায় ১৩ বছর পরে একই প্রক্রিয়ায় বিএনপি নেতা জুলু পরিচালক হতে যাচ্ছেন– এটি দেখে হতাশা প্রকাশ করেছেন খেলোয়াড় ও সংগঠকরা। বিএনপি-সমর্থিত ক্রীড়া সংগঠকদের মধ্যে যারা গত ১৫ বছর নানাভাবে নির্যাতিত হয়েছেন, তারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে তাদের কেউ বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
জানা গেছে, ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচনের তৎপরতা শুরু হলে জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রতিনিধি চেয়ে জেলাগুলোতে চিঠি দেওয়া হয়। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে সবার অগোচরেই খুলনার প্রতিনিধি হিসেবে জুলফিকার আলী খানের নাম পাঠান জেলা প্রশাসক।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম, জহির মাহমুদ স্বপন ও শাহনাজ খাতুন জানান, প্রতি মাসেই সংস্থার একাধিক সভা হয়। বিসিবির কাউন্সিলর নির্বাচিত করার বিষয়ে কোনো সভায় আলোচনা হয়নি।
সদস্য সচিব আলীম উজ জামান বলেন, ‘কাউন্সিলরের চিঠি আমরা দেখিনি, কোনো আলোচনাও হয়নি। বিষয়টি সম্পূর্ণ জেলা প্রশাসকের এখতিয়ারাধীন।’
১৯৯৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত খুলনা জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এস এম মোয়াজ্জেম রশিদী দোজা, মনিরুজ্জামান মনি ও কাজী শামীম আহসান। তিনজনের সঙ্গেই কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। তারা জানান, গত ২৭ বছরে জুলফিকার আলী কোনো ক্লাব বা সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করেননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে খুলনার দুজন ক্রীড়া সংগঠক ও একজন আম্পায়ার বলেন, বিসিবি নির্বাচনে খুলনার ক্রীড়াঙ্গনে সক্রিয় একাধিক সংগঠকের নাম আলোচনায় ছিল। হঠাৎ করে কীভাবে জুলফিকার আলী জুলুর নাম এলো, তারা বুঝতে পারছেন না।